অপারেটরদের কল পর্যবেক্ষণে নামছে বিটিআরসি

সেলফোন অপারেটরদের কল
পর্যবেক্ষণে ২০১৩ সালে
প্রথমবারের মতো উদ্যোগ নেয়
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ
নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর
অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয়
পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা (সিএমএস)
স্থাপনে গত বছর এপ্রিলে দরপত্রও
আহ্বান করা হয়। কিন্তু নানা
জটিলতায় শেষ পর্যন্ত তা বাতিল
হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি আবারো
সিএমএস স্থাপনের উদ্যোগ
নিয়েছে কমিশন।
সূত্রমতে, কল আদান-প্রদানে
পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায়
অপারেটরদের দেয়া তথ্যের ওপরই
নির্ভর করতে হচ্ছে নিয়ন্ত্রক
সংস্থাকে। অপারেটরদের দেয়া
এ তথ্যের ভিত্তিতেই খাতটি
থেকে রাজস্ব আদায় করে সরকার।
পাশাপাশি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা না
থাকায় অবৈধ ভিওআইপিরও
সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য থাকছে
না। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে
রাজস্ব বাড়ানোর অংশ হিসেবে
সিএমএস স্থাপনের এ উদ্যোগ
বিটিআরসির। শিগগিরই এটি
বাস্তবায়নের বিষয়ে কার্যক্রম শুরু
করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ উদ্যোগে সব
ধরনের সহযোগিতা দেয়ার কথা
বলছে সেলফোন অপারেটররা।
যোগাযোগ করা হলে
গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট
অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ
হোসেন বলেন, টেলিযোগাযোগ
আইন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রক সংস্থা কল
পর্যবেক্ষণের এ ধরনের ব্যবস্থা
বাস্তবায়ন করতে পারে।
গ্রামীণফোন এ ব্যাপারে
নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সর্বোচ্চ
সহযোগিতা করবে।
জানা গেছে, সিএমএস ব্যবস্থার
জন্য গত বছর আহ্বান করা দরপত্রে
১৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
যাচাই-বাছাই শেষে সাত
প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত
তালিকা করা হয়। এগুলো হলো—
ডাটাসফট সিস্টেম, এসজিএস,
এনসফট, সফরেকম, এসএস, কিনোট
সিগোস, এশিয়া প্যাসিফিক,
ঢাকা সার্ভিস কোম্পানি ও
টেকট্রনিক্স। প্রাথমিকভাবে
যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে
কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব জমা
দিতে বলা হলে পাঁচটি
প্রতিষ্ঠান তাদের প্রস্তাব জমা
দেয়।
জমা দেয়া প্রস্তাব অনুযায়ী
কারিগরি মূল্যায়নে নির্ধারিত
নম্বরের চেয়ে কম পাওয়ায় বাদ
পড়ে ডাটাসফট ও ঢাকা সার্ভিস
কোম্পানি। অন্য তিন প্রতিষ্ঠান
এনসফট, সফরেকম ও এসজিএস পায়
যথাক্রমে ৮৯ দশমিক ৫, ৭৮ ও ৭১
দশমিক ৫ নম্বর। আর্থিক প্রস্তাব
খোলা হয় নির্ধারিত ১৫
জুলাইয়ের পরিবর্তে ৬ আগস্ট।
দরপত্রের শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে
সফরেকমের দেয়া প্রস্তাব এ
পর্যায়ে বাতিল করা হয়। আর্থিক
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, তিন বছর
মেয়াদে সিএমএস পরিচালনায়
এনসফট ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার
ডলার ও এসজিএস ৫ কোটি ৯১ লাখ
৪০ হাজার ডলারের প্রস্তাব দেয়।
যদিও কোনো প্রতিষ্ঠানকেই সে
সময় কার্যাদেশ দেয়া হয়নি। ফলে
থমকে যায় সিএমএস স্থাপনের
কার্যক্রম।
গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি
উঠে আসে। বৈঠকে নতুন করে দরপত্র
আহ্বানের সুপারিশ করে কমিটি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব
ফয়জুর রহমান চৌধুরী জানান, অবৈধ
ভিওআইপি কল টার্মিনেশন
শনাক্তের লক্ষ্য নিয়ে সিএমএস
স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
দ্রুত এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এছাড়া অবৈধ কল টার্মিনেশন
বন্ধের বিষয়েও কঠোর ব্যবস্থা
নিচ্ছে সরকার।
এদিকে প্রথম দফার দরপত্রে
সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এনসফট
সম্প্রতি দেউলিয়াত্বের আবেদন
করে। প্যারিসভিত্তিক
প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের
ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্যিক
আদালতে কোম্পানি বন্ধ করে
দেয়ার জন্য আবেদন করেছে বলে
সোসিয়েতে ডটকম সূত্রে জানা
গেছে।
বিটিআরসির মুখপাত্র এ বিষয়ে
জানান, প্রথম দফার প্রক্রিয়ার
ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা তৈরি
হয়েছিল, সেগুলো চিহ্নিত করে
নতুন করে সিএমএসের জন্য দরপত্র
আহ্বানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
নতুন ধরনের এ ব্যবস্থা চালুর
অভিজ্ঞতা না থাকায় এসব সমস্যা
তৈরি হয়েছে। এটি রাজস্ব
নিশ্চিত করার পাশাপাশি অবৈধ
ভিওআইপি বন্ধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রাখবে।
জানা গেছে, দুই বছর আগে অবৈধ
ভিওআইপি অনুসন্ধান তদন্ত কমিটি
গঠন করে বিটিআরসি। তিন মাস কল
লিস্ট মুছে ফেলা, রেডিও লিংক
ব্যবহারসহ ১৩টি কারণ উল্লেখ করে
প্রতিবেদন দেয় কমিটি। তবে
পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে এর
সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব
হয়নি। অন্যদিকে অবৈধ ভিওআইপির
প্রযুক্তি উন্নয়নের ফলে তাদের
চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ছিল।
সিএমএস স্থাপনের ক্ষেত্রে এটি
বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
Created at 2015-03-17 19:24:48
Back to posts
UNDER MAINTENANCE